আমড়া তরকারির ৮ রেসিপি

বাজারে বেশ সহজলভ্য ফল আমড়া। পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এক ফল এটি। কাঁচা কিংবা তরকারিতে দিয়েও খেতে পারেন এই ফল। আজকের আয়োজন আমড়া তরকারির কিছু রেসিপি।

আমড়া দিয়ে মুরগি ভুনা
উপকরণ: মুরগি ১টি, আমড়া ৩টি, তেজপাতা ২টি, এলাচ ৩-৪টি, দারুচিনি ২ টুকরো, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, ধনে গুঁড়া আধা চা চামচ, জিরার গুঁড়া আধা চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া আধা চা চামচ, আদা বাটা আধা চা চামচ, রসুন বাটা আধা চা চামচ ও তেল আধা কাপ।

প্রণালি: গরম তেলে পেঁয়াজ কুচি সামান্য ভেজে নিতে হবে। অল্প সময় ভেজে তেজপাতা, এলাচ, দারুচিনি দিয়ে আবার ভাজতে হবে। পেঁয়াজ হালকা ভাজা হলে এর মধ্যে একে একে বাটা মসলা, গুঁড়া মসলা ও লবণ দিয়ে নেড়ে অল্প পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। মসলা কষানো হলে এর মধ্যে মুরগি দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে অল্প পানি দিয়ে ঢেকে দিন।

মাখা মাখা পানি দিলেই চলবে। মাংস থেকে পানি বের হবে। সে পানিতেই মাংস সেদ্ধ হয়ে যাবে। মাংস আধা সেদ্ধ হয়ে গেলে এবার এর মধ্যে আমড়া দিয়ে দিন। অল্প কিছুক্ষণ আমড়া কষিয়ে আবার মাখা মাখা করে পানি দিয়ে দিতে হবে। ঢেকে দিতে হবে কিছুক্ষণের জন্য। মাংস ও আমড়া সেদ্ধ হয়ে ঝোল মাখো মাখো হয়ে গেলেই উপরে সামান্য জিরার গুঁড়া ছড়িয়ে নামিয়ে নিতে হবে। ব্যাস তৈরি হয়ে গেলো আমড়া দিয়ে মুরগি ভুনা।

আমড়ায় খাসির মাংস
উপকরণ: সেদ্ধ করা খাসির মাংস ৫০০ গ্রাম, সেদ্ধ করা আস্ত আমড়া ৫-৬টি, পেঁয়াজ কুচি ৪ টেবিল চামচ, রসুন কুচি ১ চা-চামচ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৪-৫টি, তেজপাতা ২টি। দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, গোলমরিচ, জয়ত্রী ও জিরা টেলে গুঁড়া করে নেওয়া মিশ্রণটি ১ চা-চামচ ব্যবহার করতে হবে, পেয়াঁজ বেরেস্তা ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো, গরম পানি ২ কাপ।

প্রণালি: সসপ্যানে ঘি দিয়ে তাতে পেঁয়াজ বেরেস্তা করে তুলে রাখুন। তারপর পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, আদাবাটা, লবণ, তেজপাতা ও মরিচের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মসলা কষে নিন। তারপর খাসির মাংস দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে রান্না করুন। আমড়া দিয়ে ২ কাপ গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিন। ঝোল ঘন হয়ে এলে তাতে কাঁচামরিচ, চিনি, গরম মসলা গুঁড়া ও পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে নামিয়ে নিন।

নারকেল দুধে আমড়া-ডিম
উপকরণ: সেদ্ধ ডিম ৪টি, সেদ্ধ আমড়া ৪টি, নারকেল দুধ ১ কাপ, পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন ও জিরাবাটা আধা চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, আস্ত কাঁচা মরিচ ৪-৫টি, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ করে, এলাচ ২টি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল পরিমাণ মতো।

প্রণালি: কড়াইয়ে তেল গরম করে ডিম ও আমড়া হালকা ভেজে তুলে রাখুন। এবার তেলে সব মসলা দিয়ে একটু কষে নিন। তাতে ডিম, আমড়া ও পানি দিয়ে ঢেকে দিন। সেদ্ধ হলে নারকেলের দুধ, চিনি ও এলাচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ রান্না করুন। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ ও বেরেস্তা ছড়িয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

নারকেল দুধে আমড়া-ডিম
উপকরণ: সেদ্ধ ডিম ৪টি, সেদ্ধ আমড়া ৪টি, নারকেল দুধ ১ কাপ, পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন ও জিরাবাটা আধা চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, আস্ত কাঁচা মরিচ ৪-৫টি, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ করে, এলাচ ২টি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি: কড়াইয়ে তেল গরম করে ডিম ও আমড়া হালকা ভেজে তুলে রাখুন। এবার তেলে সব মসলা দিয়ে একটু কষে নিন। তাতে ডিম, আমড়া ও পানি দিয়ে ঢেকে দিন। সেদ্ধ হলে নারকেলের দুধ, চিনি ও এলাচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ রান্না করুন। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ ও বেরেস্তা ছড়িয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

পাঙ্গাশ মাছ, আমড়া ও বেগুনের ঝোল
উপকরণ: পাঙ্গাশ মাছ, আমড়া ৩ টি(চির করা), বেগুন ২টি (এক ফালি করে টুকরা করা), পেঁয়াজ বাটা ৩ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১/২ চা চামচ, আদা বাটা ১/২ চা চামচ, জিরা বাটা ১/২ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/৩ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ ও তেল পরিমাণ মত।

প্রণালি: প্রথমেই মাছের টুকরাগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এবার একটি পাত্রে মসলা ভালো করে কষিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পর মাছ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন। মাছ কষানো হলে তাতে আমড়া ও বেগুন যোগ করে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন। এবার পরিমাণমত পানি যোগ করে ঢেকে রান্না করুন। পছন্দ মাফিক ঝোল রেখে নামিয়ে নিন।

আমড়া ও চিংড়ি মাছের কচুরমুখী
উপকরণ: দেশীয় কচুরমুখী, চিংড়ি মাছ, আমড়া, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ ও হলুদের গুঁড়া, কাঁচামরিচ, ধনে পাতা, লবণ ও সয়াবিন তেল।

প্রণালি:  চুলায় একটা কড়াই বসিয়ে পরিমাণ মতো সয়াবিন তেল দিয়ে এর মধ্যে পেঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ কুচি দিতে হবে। চিংড়ি মাছ ভেজে নিতে হবে। পরে এর মধ্যে একটু বেশি করে রসুন বাটা, হলুদ ও মরিচ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া ও পরিমাণ মতো লবণ দিতে হবে। এবার সবগুলো উপকরণ নেড়ে পরিমাণ মতো পানি দিতে হবে। তারপর কচুরমুখী এর মধ্যে আস্তে আস্তে দিতে হবে। আগে থেকে কেটে রাখা আমড়া এর মধ্যে দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে নিতে হবে। কচুর মুখীগুলো বেশ কিছুক্ষণ চুলায় রেখে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর সিদ্ধ হয়ে গেলে আমি এর মধ্যে আগে কেটে রাখা ধনিয়া পাতা গুলো দিয়ে দিতে হবে।

পাকা আমড়ার খাট্টা-মিঠা
উপকরণ: পাকা আমড়া ২ কাপ, নারকেলের দুধ ২ কাপ, দারুচিনি ২ টুকরো, এলাচ ২টি, চিনি আধা কাপ, লবণ ১ চিমটি, ঘি ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি: সসপ্যানে ঘি দিয়ে তাতে টুকরো করা আমড়া দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নারকেলের দুধ দিন। আমড়া সেদ্ধ হয়ে নরম হলে তাতে চিনি, লবণ, দারুচিনি ও এলাচ দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন। ঠান্ডা হলে মুড়ি, খই বা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

আমড়ার ডাল
উপকরণ: আমড়া টুকরো করে কাটা ১ কাপ, মসুর ডাল ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, রসুন কুচি ১ চা-চামচ, আস্ত জিরা সামান্য, শুকনা মরিচ ২টি, তেজপাতা ১টি, হলুদ সামান্য, কাঁচা মরিচ আস্ত ২টি, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো।

প্রণালি: ডাল ধুয়ে লবণ ও পানি দিয়ে চুলায় জ্বাল দিন। ডাল সেদ্ধ হলে ঘুটে মিশিয়ে দিন এবং সামান্য হলুদ, কাঁচা মরিচ, রসুন, তেজপাতা ও আমড়া দিন। আমড়া সেদ্ধ হলে নামিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে তেল গরম করে রসুন কুচি, পেঁয়াজ কুচি, আস্ত জিরা ও শুকনো মরিচ দিয়ে ফোড়ন দিন। এতে রান্না করা আমড়ার ডাল ঢেলে দিন। নেড়েচেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।