খরগোশের আদ্যোপান্ত

খরগোশ বা শশক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের “ল্যাগোমর্ফা” বর্গের “লেপরিডি” গোত্রের সদস্য প্রাণীদের সাধারণ নাম। এই গোত্রটিতে প্রায় ৫২টি প্রজাতির খরগোশ অন্তর্ভুক্ত। গড়ে প্রত্যেকটি খরগোশ ১০ বছর বাঁচে। তবে খাওয়া ও অন্যান্য বিষয়ের ভিত্তিতে এটি ভিন্ন হতে পারে। এই প্রাণীর সবাই প্রধানত তৃণভূমি এলাকার বাসিন্দা।

খরগোশের আবাসস্থল
খরগোশ প্রায় সবাই তৃণভূমি এলাকায় বসবাস করে থাকে। তীব্র ঠাণ্ডা এলাকা থেকে অতি উষ্ণ এলাকা পর্যন্ত সর্বত্রই এদের বিস্তৃতি রয়েছে। কেবল কুমেরু অঞ্চলে এদের দেখা যায় না। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং আরও কয়েকটি দেশে এরা স্থানীয় বাসিন্দা নয়। মানুষের মাধ্যমে যে দেশে এদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং সেখানে এরা ক্ষতিকর প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। পূর্ব গোলার্ধে এদের প্রজাতি সংখ্যা ২৮, পশ্চিম গোলার্ধে ২৪।

খরগোশের বৈশিষ্ট্য
খরগোশদের লেজ খাটো, কান লম্বা এবং পিছনের পা লম্বাটে। এরা সামাজিক প্রাণী। অবশ্য “লেপাস” গণের খরগোশ (ইংরেজি: Hare) অতটা সামাজিক নয়। শিয়াল, বনবিড়াল, কুকুর, বেজী এদের শত্রু। এরা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না।

খরগোশের খাদ্য
তৃণভোজী খরগোশের প্রধান খাবার ঘাস যা প্রতিদিন এর মোট খাবারের ৭০%-৮০% খাওয়াতে হবে একটি খরগোশ প্রতিদিন মাত্র ১৫০ গ্রাম খাবার খায়। পছন্দের খাদ্য দূর্বাঘাস,কলমি শাক। তবে কলমি শাক প্রতিদিন দেওয়া যাবে না । সাপ্তাহে ২ দিন সামান্য পরিমান দেওয়া যেতে পারে । এরা গাজর খুব ভালোবাসে।

খরগোশ বাণিজ্যিকভাবে পালন
র‍্যাপিট ও হেয়ার এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত। তবে খামার ভিত্তিতে র‍্যাপিট পালন সহজ ও লাভজনক। মিশর, সুদান, লিবিয়া, আলজেরিয়া, পোল্যান্ড, রাশিয়া, কোরিয়া, জাপান ও চীনে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশের খামার রয়েছে। দেশে খরগোশের মাংস অভিজাত শ্রেণীর প্রিয় খাবার।

বাংলাদেশে ১৯৯৮ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রথম খরগোশ পালন শুরু হয় মুক্তাগাছার লক্ষীখোলা এলাকায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড.আবিদুর রেজার তত্বাবধানে এবং জেএনডিপির ব্যবস্থাপনায় খরগোশ পালন জনপ্রিয়তা লাভ করে। ৬ মাস বয়সে বাচ্চা দেয় একসাথে কমপক্ষে ৪-৮ টি বাচ্চা দেয়। ৩ মাসে খরগোশের ওজন হয় ১ কেজি বা আরেকটু বেশি ।