প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন। এই গরমে সারাদিন ক্লান্তির পর ঠান্ডা ঠান্ডা পানীয় না খেলে কী চলে! তেমনই এক ঠান্ডা পানীয় হলো মাঠা। এক গ্লাস ঠাণ্ডা মাঠা প্রশান্তি দিতে পারে। স্বাস্থ্যকর মাঠা বানিয়ে ফেলতে পারেন নিজেই। ফ্রিজে চার থেকে পাঁচদিন পর্যন্ত রেখে খেতে পারবেন মাঠা। জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন।
উপকরণ: টকদই ২ কাপ, লবণ আধা চা চামচ ও লেবুর রস ১ টেবিল চামচ।
পদ্ধতি: সব উপকরণের সঙ্গে এক কাপ পানি ও কয়েক টুকরো বরফ কুচি একসঙ্গে মিশিয়ে নিন বড় একটি জগে। তারপর নিয়ে হুইস্ক অথবা ডালঘুটনি দিয়ে ভালো করে ঘুটে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে স্বাস্থ্যকর মাঠা।
মাঠা খাওয়ার উপকারিতা: মাঠা খাওয়ার উপকারিতা হচ্ছে এটি শরীরের মেদ কমায় এবং ডিহাইড্রেশন দূর করে। তাছাড়া মাঠা দই দিয়ে তৈরি হওয়ার কারণ এতে দুধের পুষ্টিগুন পাওয়া যায়। মাঠা আমাদের পেটের বদহজম দূর করে এবং শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।
মাঠা আমাদের খুব প্রিয় একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর তরল পানীয়। এটি নিয়মিত পান করলে আপনার শরীরের অনেক সমস্যা দূর হয় এমনকি শরীরের অনেক পুষ্টি সাধনও হয়। মাঠা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো –
মাঠার স্বাস্থ্য উপকারিতা
১. শরীরে পুষ্টি যোগায়: মাঠা দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়। তাই এতে দুধের অনেক পুষ্টিগুন পাওয়া যায়। মাঠা মানব শরীরে অনেক ধরনের জটিলতা দূর করতে সক্ষম। যারা দুধ খেতে পারে না বা যাদের দুধে এলার্জি হয় তাদের জন্য মাঠা খুবই উপযোগী। দুধ খেতে না পারলেও মাঠা খাওয়ার মাধ্যমে দুধের পুষ্টিগুন খুব সহজেই পেতে পারেন। মাঠা মানব শরীরের জন্য খুব সহজপাচ্য একটি পানীয়।
২. শরীরের মেদ কমায়: মাঠা একটি দুধ্যজাতীয় খাবার হলেও এটি শরীরের মেদ-চর্বি কমাতে ব্যাপক উপকারি। এটি মানব শরীরে মেদ-চর্বির স্তর কাটিয়ে শরীরের স্থুলতা কমায় এবং স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। এটি হজমে সহায়তা করে এবং শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে বাধা দেয়। প্রতিদিন এক গ্লাস মাঠা খাওয়ার ফলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ দূর হয়।
৩. ডিহাইড্রেশন দূর করে: মাঠা খাওয়ার ফলে দেহে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন দূর হয়। প্রচুর গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারনে শরীরে ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়। গরমে শরীরের ক্লান্তি এবং পানিশূন্যতা দূর করার জন্য মাঠা খুবই উপকারি। মাঠা শরীর শুষ্ক হতে দেয় না এবং পানির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে এবং একই সাথে শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
৪. বদহজম থেকে মুক্তি দেয়: অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে অনেক সময় আমাদের বদহজম হয়। পেটে গ্যাসের আধিক্যের কারনে এসিডিটি হয়ে যায়। এসময় এক গ্লাস মাঠা খেলেই এই বদহজম থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। এটি এন্টাসিডের ন্যায় কাজ করে। বদহজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে মাঠা এন্টাসিডের থেকেও ভালো কাজ করে এবং শরীরে প্রশান্তি আনে।
৫. ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে: মাঠা শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়ক। অনেকেই দুধ খেতে পারেন বা পছন্দ করেন না। এতে করে দেহে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়। দুধ খেতে না পারলেও মাঠা খাওয়ার মাধ্যমে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ১০০০-১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন।
এক গ্লাস দুধে ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে আর এক গ্লাস মাঠায় থাকে ৩৫০ মিলিগ্রাম। নিয়মিত মাঠা খাওয়ার অভ্যাস করলে দেহে ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি পূরণ হবে।
৬. রোগ প্রতিরোধ করে: মাঠা মানবশরীরে রোগ প্রতিরোধ করতেও বেশ সহায়ক। নিয়মিত মাঠা খাওয়ার উপকারিতা হলো এটি দেহের পুষ্টি বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন রোগ নিরাময় করে।
নিয়মিত মাঠা পান করার ফলে দেহে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে বিদ্যমান বায়োঅ্যাক্টিভ প্রোটিন দেহে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। যাদের ব্লাড প্রেশার এর সমস্যা তাদের জন্য এটি খুবই উপযোগী। মাঠাতে থাকা অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
এছাড়াও মাঠা মরনব্যাধি ক্যান্সারকেও রুখে দিতে পারে। মানবদেহে রোগ প্রতিরোধে মাঠা অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে।
যাদের মাঠা খাওয়া অনুচিত: মাঠা সাধারণত সকলের জন্যই উপকারি। মাঠার বহুল গুনাগুন এবং উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এতক্ষণ জানলাম। তবে মাঠা খাওয়ার অপকারিতাও রয়েছে। যে সকল ক্ষেত্রে মাঠা না খাওয়াই উত্তম তা হলো:
কিডনি রোগীদের মাঠা খাওয়া উচিত নয়। কারন এটি তৈরি করতে লবণ ব্যবহার করা হয় যা কিডনির সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে সামান্য পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে।
মাঠা পেটের অনেক সমস্যার সমাধান করলেও আলসার রোগীদের মাঠা খাওয়া উচিত নয়। এতে আলসারের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
খালি পেটে মাঠা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে মাঠা খেলে পেটে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমাতে এবং বুক জ্বালা ভাব কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, খালি পেটে মাঠা খাওয়া আমাদের শরীরের Metabolism বৃদ্ধি করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
এই Drink এর ক্যালোরি তুলনামূলকভাবে কম এবং এটি ক্ষুধা নিবারণ করতে সাহায্য করে। এটি চিনিযুক্ত পানীয় বা স্ন্যাকসের একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে খাওয়া যায়।
মনে রাখা উচিত, প্রত্যেকের শরীর আলাদা এবং এক ব্যক্তির জন্য যা কাজ করে তা অন্যের জন্য কাজ নাও করতে পারে। তাই, আপনি ইতোমধ্যে কোন শারীরিক সমস্যায় বা ডাক্তারের পরামর্শে থাকলে, আপনার খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার আগে ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।

জন্ম কুমিল্লায়। আব্দুল্লাহেল মুহিত ও আঞ্জুমান নাহারের বড় ছেলে। কুমিল্লার জেলার দেবিদ্বার উপজেলার দুয়ারিয়া গ্রামে বাড়ি। গাছ-গাছালির ছায়ায়, লতাগুল্মের সাথে বড় হওয়া। পাখি ও ফড়িংয়ের পেছনে ছুটে আর ছিপ-নাটাই হাতে কেটেছে শৈশব। তবে কৈশোর কেটেছে নাগরিক শহর ঢাকায়। পড়ালেখার হাতেখড়ি মায়ের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় ‘কুমিল্লা পলিটেকনিক্যাল কোয়ার্টার স্কুলে’। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত নিজ গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে পড়া হয়। পরে পাশের গ্রামের মাদরাসায় পড়া শুরু। পাঠের শেষ হয় ঢাকায়। লেখালেখি শুরু ছড়া-কবিতা দিয়ে, তবে থিতু হওয়া গল্প-উপন্যাসে। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও কাব্যচর্চা বাদ পড়েনি। ভিন্ন ভিন্ন লিটলম্যাগে লেখা প্রকাশ হলেও বনে-বাদাড়ে কিশোর দল প্রকাশিত প্রথম বই। আওয়ার ইসলাম নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সাব-এডিটর হিসেবে কাজ করা হয় পাঁচ বছর। চলমান সময়ে নতুন কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে।