গ্রহণ একটি বর্ণিল আর আকর্ষণীয় মহাজাগতিক ঘটনা। সে কারণেই গ্রহণকে ঘিরে রয়েছে মানুষের গভীর আগ্রহ আর গ্রহণকে ঘিরে গড়ে উঠেছে নানাধরনের পর্যটন আকর্ষণ। মহাজগতে যত রকমের গ্রহণ হয়, তার মধ্যে একটি হল চন্দ্রগ্রহণ। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের গ্রহণ আছে।
চন্দ্রগ্রহণ কী ও কীভাবে হয়?
পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। একসময় পৃথিবী, চাঁদ এবং সূর্যের মাঝে এসে যায়। যখন এক সরলরেখায় পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে আসে, তখন পৃথিবীর ছায়ার জন্য চাঁদে সূর্যের আলো পৌঁছায় না, ফলে চাঁদকে তখন কিছু সময়ের জন্য দেখা যায় না। একে চন্দ্রগ্রহণ বলে।
চন্দ্রগ্রহনের যত ধরণ—
চন্দ্রগ্রহণ তিন রকম।
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ
নাসা ব্যাখ্যা করছে, পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ এবং সূর্য পৃথিবীর দুই পাশে ঠিক এক লাইনে অবস্থান করে। যদিও পৃথিবীর ছায়া চাঁদকে ঢেকে ফেলে, তবুও চাঁদের ওপর সূর্যরশ্মির কিছুটা গিয়ে পড়ে।
চাঁদে পৌঁছানোর জন্য ওই সূর্যরশ্মিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এই যাবার পথে সূর্যের নীল রশ্মির বেশিটাই বায়ুমণ্ডলে শোষিত হয়ে যায়। ফলে এই প্রক্রিয়ার সময় চাঁদকে দেখায় লাল এবং এই রক্তিম চাঁদকে অনেকসময় নাম দেয়া হয় “ব্লাড মুন”।
আইএসি বলছে, চাঁদের ব্যাসের চেয়ে আমাদের গ্রহের ব্যাস চারগুণ বড়, ফলে পৃথিবীর ছায়ার পরিধিও অনেক বেশি। তাই পুরো চন্দ্রগ্রহণের প্রক্রিয়া অনেক লম্বা সময় ধরে চলে – ১০৪ মিনিট পর্যন্ত এটা চলতে পারে।
খণ্ডগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ
চাঁদের খণ্ডগ্রাস গ্রহণ হয় যখন চাঁদের একটা অংশ পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে যায়।
পৃথিবী চাঁদকে কতটা গ্রাস করে নিচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে হয় গাঢ় লাল, কখনও আবার মরচে রং বা কাঠকয়লার রংয়ের ছায়া পড়ে চাঁদের ছায়ায় ঢাকা অংশে। চাঁদের বুকে পৃথিবীর ছায়া কোথাও হালকা, কোথাও গাঢ় হবার কারণে এরকম দেখায়।
চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে পৃথিবী থাকে চাঁদ আর সূর্যের মাঝখানে – ফলে পৃথিবীর অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশের ভেতর চাঁদ প্রবেশ করে বা পৃথিবীর ছায়া চাঁদকে পুরো বা আংশিকভাবে ঢেকে দেয়।
আরও পড়ুন: সূর্যগ্রহণ কী ও কীভাবে হয়? সূর্যগ্রহণ কত রকমের!
পেনাম্ব্রা চন্দ্রগ্রহণ
এই গ্রহণ হয় যখন পৃথিবীর হালকা ছায়াচ্ছন্ন অংশ লাতিন ভাষায় যাকে বলা হয় পেনাম্ব্রা সেই অংশের মধ্যে দিয়ে চাঁদ প্রদক্ষিণ করে। এই ছায়া গাঢ় নয়- অনেকটাই হালকা।
ফলে এই গ্রহণ সাধারণ মানুষের চোখে সেভাবে ধরা পড়ে না। এই ছায়াচ্ছন্ন অংশ যদি খুবই ছোট হয় তাহলে চাঁদের গ্রাস হচ্ছে কিনা তা বোঝা কঠিন। এ কারণে দিনপঞ্জিতে এই গ্রহণের কোন উল্লেখ থাকে না। এই ধরনের গ্রহণের খবর রাখেন একমাত্র জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

জন্ম কুমিল্লায়। নিউজ পোর্টাল আওয়ার ইসলামে সাব-এডিটর হিসেবে কাজ করেছি পাঁচ বছর। চলমান সময়ে নতুন কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে।