চুম্বক কী, কীভাবে বানানো হয় এটি?

চুম্বক— এমন বস্তু যা বিশেষ আকর্ষণ ক্ষমতাসম্পন্ন। চুম্বকের এই ক্ষমতাকে চুম্বকত্ব বলা হয়। চুম্বকের চুম্বকত্বের কারণে চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। এই চৌম্বকক্ষেত্র অদৃশ্য, কিন্তু এর মাধ্যমেই চুম্বকের প্রায় সব ধর্ম প্রকাশ পায়; এটি একটি বল যা তার চারপাশের ফেরোচৌম্বক পদার্থকে আকর্ষণ করে এবং অন্য চুম্বককে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ করে। প্রথম স্থায়ী চুম্বক তৈরি করা হয় ইস্পাত দিয়ে।

চুম্বক অনেক প্রকার— দণ্ড চুম্বক, গোল চুম্বক ইত্যাদি। পদার্থবিজ্ঞান অনুসারে চুম্বক দুই প্রকার— সাধারণ চুম্বক, তড়িৎচুম্বক। সাধারণ চুম্বক বলতে দণ্ড চুম্বককেই বোঝানো হয়। চুম্বকের দুটি প্রান্ত— উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু।

চুম্বকের প্রকারভেদ: উৎসের বিচারে চুম্বককে দুইভাগে ভাগ করা যায়: প্রাকৃতিক চুম্বক, কৃত্রিম চুম্বক।

প্রাকৃতিক চুম্বক: প্রকৃতিতে লোহা ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে তৈরি ম্যাগনেটাইট পাথর পাওয়া যায়, যার মধ্যে চুম্বকত্ব ধর্ম দেখা যায়, অর্থাৎ লোহা, নিকেল, কোবাল্ট ইত্যাদিকে আকর্ষণ করতে পারে এবং দিগ্‌দর্শী ধর্মও আছে, তাকে প্রাকৃতিক চুম্বক বা লোডস্টোন বলে। এর রাসায়নিক সংকেত Fe3O4। এই প্রাকৃতিক চুম্বকের নির্দিষ্ট কোনো আকার থাকে না। তাছাড়া এর আকর্ষণী ক্ষমতাও অনেক কম হয়।

কৃত্রিম চুম্বক: লোহা, ইষ্পাত , কোবাল্ট , নিকেল বা এদের বিভিন্ন সংকর ধাতুকে কয়েকটি বিশেষ পদ্ধতিতে চুম্বকে পরিণত করা হলে, ওই চুম্বককে কৃত্রিম চুম্বক বলে। প্রাকৃতিক চুম্বকের নির্দিষ্ট কোনো জ্যামিতিক আকার বা আকৃতি নেই এবং প্রাকৃতিক চুম্বকের চৌম্বক শক্তিও অনেক কম ও দিগ্‌দর্শী ধর্মও স্পষ্ট নয়। কিন্তু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে বিশেষ আকার বিশিষ্ট শক্তিশালী চুম্বকের প্রয়োজন হয়। এইজন্য কৃত্রিম উপায়ে নানান আকারের চুম্বক প্রস্তুত করা হয়। এগুলিই কৃত্রিম চুম্বক।

কীভাবে তৈরি করা হয় চুম্বক
তামা, কোবাল্ট, সালফার, নিকেল, লোহা, অ্যালুমনিয়াম, টাইটেনিয়াম— গলিয়ে একটি ছাঁচে ঢালা হয়। গলিত ধাতুর তাপ কমতে থাকলে আলাদা জায়গায় রাখা হয়। পরে ছাঁচ থেকে ধাতুকে পৃথক করা হয়। পরে মেশিনের মাধ্যমে ধাতুতে ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক চার্জ করা হয়। তবেই ধাতুটি চুম্বকে পরিণত হয়।