সত্তরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও শেখ মুজিবকে সরকার গঠনে আহ্বান করার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ১ মার্চ জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। প্রতিবাদে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। এরপর ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যা চালায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং শুরু হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ।
গণহত্যা শুরুর পর সামরিক বাহিনী, ইপিআর, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর বাঙালি সদস্য এবং তরুণ দেশপ্রেমিকেরা স্থানীয়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে পুরো দেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। সেক্টর কমান্ডারদের নেতৃত্বে যুদ্ধ পরিচালিত হয়। জেনে নিন কোন এলাকা কোন সেক্টরে ছিল এবং তার কমান্ডার কে ছিল।
সেক্টর নং ১
ফেনী নদী থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি এবং ফেনী পর্যন্ত ছিল ‘সেক্টর নং ১’। ১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান এবং জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর রফিকুল ইসলাম। আর এই সেক্টরকে পাঁচটি সাব সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছিল।
সেক্টর নং ২
ঢাকা, কুমিল্লা, আখাউড়া–ভৈরব, নোয়াখালী ও ফরিদপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল ‘সেক্টর নং ২’। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর খালেদ মোশাররফ এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এটিএম হায়দার। এই সেক্টরে ৬টি সাব-সেক্টর ছিল।
সেক্টর নং ৩
হবিগঞ্জ, আখাউড়া–ভৈরব রেললাইন থেকে পূর্ব দিকে কুমিল্লা জেলার অংশবিশেষ এবং কিশোরগঞ্জ এবং ঢাকার কিছু অংশ ছিল ‘সেক্টর নং ৩’ এর আওতায়। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর কেএম শফিউল্লাহ। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন মেজর এএনএম নুরুজ্জামান। আর এই সেক্টরে ছিল ৭টি সাব-সেক্টর।
সেক্টর নং ৪
সিলেট জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত হয়েছিল ‘সেক্টর নং ৪’। এই সেক্টরেও ছিল ৬টি সাব-সেক্টর। মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর সিআর দত্ত (পরে মেজর জেনারেলা) এবং পরে ক্যাপ্টেন এ রব।
সেক্টর নং ৫
বৃহত্তর ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং সিলেট জেলার অংশ বিশেষ নিয়ে ‘সেক্টর নং ৫‘ গঠিত হয় । মেজর মীর শওকত আলী ছিলেন সেক্টর কমান্ডার। এই সেক্টরকেও ৬টি সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়ছিল।
সেক্টর নং ৬
দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও মহাকুমা এবং ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী অঞ্চল ব্যতীত সমগ্র রংপুর নিয়ে গঠিত হয় ‘সেক্টর নং ৬’। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন উইং কমান্ডার এমকে বাশার। এই সেক্টরে ছিল ৫টি সাব-সেক্টর।
সেক্টর নং ৭
রাজশাহী, পাবনা, ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরবর্তী এলাকা ব্যতীত সমগ্র বগুড়া, দিনাজপুরের দক্ষিণ অঞ্চল এবং রংপুরের কিছু অংশ ছিল ‘সেক্টর নং ৭’ এর অন্তর্ভুক্ত। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তিনজন -মেজর নাজমুল হক, সুবেদার মেজর এ রব ও মেজর (পরে লে. কর্নেল) কাজী নুরুজ্জামান। এই সেক্টরে ছিল ৯টি সাব-সেক্টর।
সেক্টর নং ৮
কুষ্টিয়া, যশোর, দৌলতপুর সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত খুলনা জেলা ও ফরিদপুরের কিছু অংশ ছিল ‘সেক্টর নং ৮’ এর অন্তর্ভুক্ত। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর (পরে লে.কর্নেল) আবু ওসমান চৌধুরী ও আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর (পরে মেজর জেনারেল) এম এ মঞ্জুর। এই সেক্টরে ছিল ৭টি সাব-সেক্টর।
সেক্টর নং ৯
পটুয়াখালী, বরিশাল ও খুলনার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয় ‘সেক্টর নং ৯’। ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর এম এ জলিল এবং তারপর মেজর জয়নাল আবেদীন। এছাড়াও অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন মেজর এম এ মঞ্জুর। এই সেক্টরে ছিল ৩টি সাব-সেক্টর।
সেক্টর নং ১০
সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল, নৌ কমান্ডো ও আভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন ছিল ‘সেক্টর নং ১০’ এর অধিনে। এ সেক্টরে নৌ কমান্ডোরা যখন যে সেক্টরে মিশনে নিয়োজিত থাকতেন, তখন সে সেক্টরের কমান্ডারের নির্দেশে কাজ করতেন। এই সেক্টরে কোনো সাব-সেক্টর ছিল না এবং ছিল না নিয়মিত কোনো সেক্টর কমান্ডার। প্রধান সেনাপতির নিয়ন্ত্রণাধীন বিশেষ বাহিনী ছিল এটি।
সেক্টর নং ১১
কিশোরগঞ্জ বাদে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা নিয়ে গঠিত হয় ‘সেক্টর নং ১১’। ১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান । নভেম্বর পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু তাহের ও তারপর ফ্লাইট লেফট্যান্যান্ট (পরে উইং কমান্ডার) এম হামিদুল্লাহ খান। এই সেক্টরকে ৭টি সাব-সেক্টর ভাগ করা হয়েছিল।

জন্ম কুমিল্লায়। আব্দুল্লাহেল মুহিত ও আঞ্জুমান নাহারের বড় ছেলে। কুমিল্লার জেলার দেবিদ্বার উপজেলার দুয়ারিয়া গ্রামে বাড়ি। গাছ-গাছালির ছায়ায়, লতাগুল্মের সাথে বড় হওয়া। পাখি ও ফড়িংয়ের পেছনে ছুটে আর ছিপ-নাটাই হাতে কেটেছে শৈশব। তবে কৈশোর কেটেছে নাগরিক শহর ঢাকায়। পড়ালেখার হাতেখড়ি মায়ের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় ‘কুমিল্লা পলিটেকনিক্যাল কোয়ার্টার স্কুলে’। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত নিজ গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে পড়া হয়। পরে পাশের গ্রামের মাদরাসায় পড়া শুরু। পাঠের শেষ হয় ঢাকায়। লেখালেখি শুরু ছড়া-কবিতা দিয়ে, তবে থিতু হওয়া গল্প-উপন্যাসে। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও কাব্যচর্চা বাদ পড়েনি। ভিন্ন ভিন্ন লিটলম্যাগে লেখা প্রকাশ হলেও বনে-বাদাড়ে কিশোর দল প্রকাশিত প্রথম বই। আওয়ার ইসলাম নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সাব-এডিটর হিসেবে কাজ করা হয় পাঁচ বছর। চলমান সময়ে নতুন কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে।