রাউটার কেনার সময় যে ভুলগুলো থেকে বেঁচে থাকবেন

ওয়াইফাই রাউটার কেনা অনেকটা নতুন স্মার্টফোন, কম্পিউটার অথবা অন্য কোন সংবেদনশীল ডিভাইস কেনার মতোই। অবশ্য এ ধরনের ডিভাইস কেনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জানা থাকলে বিষয়টি অনেকটাই সহজ হয়। ওয়াইফাই রাউটার কেনার সময় প্রায়ই আমরা কিছু সাধারন ভুল করে থাকি। এ রকম আটটি ভুল না করলে ওয়াইফাই কেনার বিষয়টি অনেকটাই সহজ হয়।

ওয়াইফাই এক্সটেন্ডারের সাথে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক মিলিয়ে ফেলা

অনেক সময়ই দেখা যায় পুরনো ওয়াইফাইটি বদলে ফেলার প্রয়োজন হলেও আমরা তা করতে চাই না। সবগুলো ডিভাইসে সংযোগ না পাওয়া, প্রায় সময়ই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, গেম সেশন শেষ হওয়ার আগেই টাইম আউট হওয়া- এসবই রাউটার পরিবর্তনের আভাস দেয়। কিন্তু অনেকেই ওয়াইফাই এক্সটেন্ডার দিয়ে এসব সমস্যা পাশ কাটাতে চায়।

ওয়াইফাই এক্সটেন্ডার দিয়ে এসব সমস্যার একটি বা দুটি সমাধান করা যায়। এভাবে কখনোই পুরোপুরি সমাধান মিলে না। কারণ পুরনো রাউটারটি এক্সটেন্ডার দিয়ে টেনে নেয়ার বিষয়টি পুরনো গাড়িতে গ্যালনের পর গ্যালন তেল ঢালার মতোই।

কম্বো মডেম বা রাউটার ইউনিট কেনা

ওয়াইফাই রাউটার/ইন্টারনেট মডেম ইউনিটের সাথে বেশিরভাগ মানুষই পরিচিত। এই ইউনিটের সংমিশ্রন অনেক লোকের জন্য কাজ করতে পারে তবে এক্ষেত্রে কিছু সমস্যাও থাকে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে যে পরিমান অর্থ ব্যয় করা হয় তা দিয়ে সেরা রাউটার বা মডেম পাওয়া যায় না। আরো একটি সমস্যা হচ্ছে এই ডিভাইসটি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় একেবারে সেট করে নিতে হয়। অর্থাৎ পুরনো বাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়িতে গেলে তা সহজেই নিয়ে যাওয়া যায় না।

এছাড়াও ক্যাবল মডেম এবং ওয়াইফাইয়ের সংমিশ্রন থাকলে এর ক্যাবল মডেমের অংশটি কোন ফাইবার কোম্পানি অথবা ইন্টারনেট নেই এমন স্থানে কাজ করবে না। এছাড়া ক্যাবল কোম্পানি নতুন ডিওসিএসআইএস মানদন্ডে উন্নীত হলেও একই ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। এক্ষেত্রে একটি ভালো স্ট্যান্ড এলোন রাউটারে বিনিয়োগ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। নির্দিষ্ট কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে রাউটার/মডেম ইউনিটের কম্বিনেশন উপকারী হলেও সবার জন্য তা নয়।

‘নতুন’ কিন্তু সেকেলে রাউটার কেনা

রাউটার কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বাজারে যে নতুন রাউটার এসেছে তা কেনা। পুরনো মডেলের নতুন রাউটার কেনা এক অর্থে অর্থেরই অপচয়। নতুন বক্সে থাকা পুরনো মডেলের রাউটারটি মূলত পাঁচ বছর আগের প্রযুক্তির। ফলে এই রাউটার কিনলে সেখানে কখনোই নতুন ওয়াইফাই প্রযুক্তি থাকবে না। প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর অন্তর ওয়াইফাই রাউটার হালনাগাদ করা উচিত। তাই যদি প্রথম কেনা রাউটারটিই যদি পাঁচ বছর আগের প্রযুক্তির হয় তাহলে এমনিই ওয়াফাই প্রজন্মের কার্ভে পিছিয়ে থাকবেন আপনি।

তাই রাউটার কেনার সময় শুধুমাত্র রিভিও এবং রেটিংয়ে কান দিলে হবে না; এটি কখন তৈরি করা হয়েছে সে বিষয়ের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

কি পরিমান জায়গায় ওয়াইফাই কভারেজ দিবে তা মাথায় না রাখা

শুধুমাত্র একটি ডিভাইসে সংযোগ দেয়ার জন্য কেউ কখনো রাউটার কেনে না। অনেকগুলো ডিভাইসে ব্যবহারের জন্যই তা ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে অনেকেই বলে থাকেন বাড়ির কিছু কিছু জায়গায় তারা ওয়াইফাই সংযোগ পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে ওয়াইফাই মেশ সিস্টেম কিনে নেয়া যায় যা বাড়ির প্রতিটি কোনা কভার করবে।

স্মার্ট হোম চাহিদা এড়িয়ে যাওয়া

যখন নতুন রাউটার কেনার বিষয়টি চিন্তা করা হয় তখন শুধুমাত্র স্মার্ট টিভি অথবা ফোনের বিষয়টিই ভেবে থাকি আমরা। তবে এক্ষেত্রে বাসায় থাকা ভিডিও ডোরবেল, স্মার্ট ক্যামেরা, স্মার্ট প্লাগ ও স্মার্ট স্পিকারের মতো অন্যান্য হোম নেটওয়ার্কের কথাও মাথায় রাখা উচিত। একটি ভালো আধুনিক রাউটার এমনভাবে তৈরি থাকে যা শুধুমাত্র ল্যাটপট ও স্মার্টফোনের মতো গুটিকয়েক ডিভাইসের সংযোগে সীমাবদ্ধ থাকে না। স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বিষয়টি সেখানে অন্তর্ভূক্ত থাকে।

অতি সাধারন বা অতি টেকনিক্যল রাউটার বাছাই করা

কয়েক বছর ধরে রাউটার নির্মাতারা বিশেষ করে মেশ নেটওয়ার্ক তৈরি করে আসছে তারা ব্যবহারীরর অভিজ্ঞতাকে আরো সহজ করার চেষ্টা করছে। নেটওয়াার্ক প্রযুক্তি সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা না থাকলে সেক্ষেত্রে মেশ রাউটারের মতো রাউটার প্লাটফর্ম বাছাই করা খুব ভুল কিছু নয়। বেশিরভাগই কাস্টম ভার্চুয়াল ল্যানস সেট আপ করতে, রাউটারে স্টার্ট আপ স্ক্রিপ্ট অথবা সফটওয়্যার চালাতে অথবা এসএসএইচ টানেল করতে চায় না। তবে কেউ যদি এধরনের কিছুতে আগ্রহি হয় তাহলে ইয়েরোর মতো ইন্টারফেস সেটআপ নিলে হতাশ হতে হবে।

আর একটি মেশ প্লাটফর্ম চাইলে এএসইউএস জেনওয়াইফাই প্লাটফর্মের বিষয়টি ভাবা যেতে পারে।