মস্তিষ্কের বিশ্রামে যা করবেন

আমাদের শরীর ও মনের সব কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক। মস্তিকে রাখা থাকে আমাদের সকল স্মৃতি। এই মস্তিষ্কই হচ্ছে আমাদের মন আর পরিচয়ের ধারক। অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার পরও মানুষ বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু মস্তিষ্কের কার্যাবলি যদি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তখন শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তাই মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্য এই বিশ্রাম বেশ প্রয়োজনীয়।

পরিমিত ঘুম: প্রতিদিন পরিমিত ঘুম মস্তিষ্ক সক্ষম রাখার জন্য খুবই কার্যকরী। ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়। এ সম্পর্কে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের লাইফলং হেলথ অ্যান্ড এইজিং এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ভিক্টোরিয়া গারফিল্ড বলেন, বয়সের ওপর ভিত্তি করে রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণভাবে বলতে গেলে পর্যাপ্ত ঘুমের ফলে আমাদের মস্তিষ্ক একটানা কাজ করা থেকে বিরত থাকতে পারে। এতে করে আমাদের কগনিটিভ ফাংশন আরও উন্নত হয়। ফলে পরবর্তী দিন সার্বিকভাবে আরও ভালো অনুভব করা যায়। কেননা এতে করে আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলি বিশ্রামের এবং পুনরুত্পাদনের সুযোগ পায়।’ আর আমরা সারাদিন যে সকল কাজ করি, পড়াশুনা করি বা যা কিছুই করি না কেন, যখন আমরা ঘুমাই তখন ওই তথ্যগুলো আমাদের মস্তিষ্কে স্থায়ীভাবে কনভার্ট হয়। পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক আট ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমের সময় আপনার মস্তিষ্ক পরবর্তী স্মৃতি ধরার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকে।

ঘুমাতে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা: ঘুমের সময়ের ধারবাহিকতা রাখতে হবে। প্রতিদিন নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে নেওয়া উত্তম। প্রায় সকল প্রাপ্তবয়স্কদের চাকরি কিংবা পারিবারিক কাজের জন্য প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে উঠতে হয় বলে তাদের সকালে ওঠার সময়টা অনেকটা অপরিবর্তনশীল। তাই এক্ষেত্রে তারা আগের রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার সময়টা প্রয়োজনমতো করে নিতে হবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন: বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে ব্যায়াম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। আপনি যতক্ষণ ব্যায়াম করবেন, ততক্ষণ আপনার মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যায়, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর খাবার: আমাদের শরীরের যেমন জ্বালানির প্রয়োজন, তেমনি মস্তিষ্কেরও জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে। শাকসবজি, মাছ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ফল, শাকসবজির সাথে ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার, বাদাম, বিনস, পালং শাক, মিষ্টি কুমড়ার বীচি, সামুদ্রিক মাছ, রঙিন ফল, গ্রিন টি ইত্যাদি খাবার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

প্রশান্তিদায়ক কাজ করুন: আপনি সবসময় চিন্তিত অনুভব করলে প্রশান্তিদায়ক কিছু করুন যেমন যোগ ব্যায়াম, ম্যাসাজ, অ্যারোমাথেরাপি কিংবা এমন কোনও কাজ যা আপনাকে প্রশান্তি এনে দেয়। নিজেকে আনন্দ দেয় এমন কাজ করুন। নিয়মিত কিছু সময় নিয়ে এমন কাজ করুন যা আপনি উপভোগ করেন, যেমন গেম খেলা, বই পড়া, কিংবা অন্য কোনও শখের কাজ।